বৃহস্পতিবার, ২২শে মে, ২০২৫
৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইরান

On the brink of World War III

অনলাইন ডেস্ক: ইসরাইলের ভূখন্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এমনটি জানিয়েছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। এ সময় ইসরাইলজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। আগেই বেসামরিক নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হয়। এর আগে ইরান ইসরাইলে যেকোনো সময় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।

এর আগে, হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছিলেন, ইসরাইলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। একইসঙ্গে এ ধরনের কোনো হামলা হলে তা তেহরানের জন্য গুরুতর পরিণতি বয়ে আনবে বলেও সতর্ক করে ওয়াশিংটন।

ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে লেবাননে স্থল আক্রমণ শুরু করেছে ইসরাইল- এমন ঘোষণা দেয়ার পর এই হামলার ঘোষণা দেয় তেহরান। ইসরাইলের হামলায় গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন।

হোয়াইট হাউজের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘ইরান ইসরাইলের বিরুদ্ধে অতিসত্বর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

আমরা এই সম্ভাব্য হামলার বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে ইসরাইলকে রক্ষা করার জন্য প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতিকে সমর্থন করছি’, বলেন ওই মার্কিন কর্মকর্তা।

একই সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের সরাসরি সামরিক হামলা তেহরানের জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনবে।’

ইরান এর আগে ঘোষণা দিয়েছিল যে, নাসরুল্লাহ হত্যা ইসরাইলের জন্য ‘ধ্বংস’ ডেকে আনবে।

এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার ইরানের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি জারি করে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ইসরাইল পৌঁছাতে পারবে না।’

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি টেলিভিশনে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী এই হামলা প্রতিরোধ এবং প্রতিশোধ নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ঠিক সময়মতোই এর জবাব দেওয়া হবে।

আইডিএফের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি আরও বলেছেন, বর্তমানে ইরান থেকে ইসরায়েলের দিকে নতুন করে কোনো হুমকি নেই।

তার মানে ইসরায়েলি বাহিনীর মুখপাত্রের বক্তব্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সমাপ্তির ইঙ্গিত স্পষ্ট। যদিও বাসিন্দাদের বোমা আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল এবং দেশজুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা সাইরেন বাজানো হয়েছিল। এই আহ্বানের এক ঘণ্টা পরই আইডিএফের মুখপাত্র ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সমাপ্তির ইঙ্গিত দিলেন।

টেলিভিশন বক্তৃতায় হাগারি বলেন, আমরা বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিরোধ করেছিল। দেশের দক্ষিণে এই হামলার কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, এই পর্যায়ে, আমরা এখনও (প্রতি–আক্রমণের) বিষয়ে পর্যালোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত হতাহতের বিষয়ে কোনো খবর পাইনি।

এর আগে, ইসরায়েল বলেছিল যে তাদের সৈন্যরা ‘সীমিত’ স্থল অভিযানের জন্য দক্ষিণ লেবাননে প্রবেশ করেছে। তবে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি বাহিনীর ওই অঞ্চলে প্রবেশের তথ্য অস্বীকার করেছে।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, লেবানন তার ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়গুলোর একটির মুখোমুখি হয়েছে।

এদিকে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে, আজ মঙ্গলবার কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গাজায় গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪১ হাজার ৬৩৮ জন নিহত এবং ৯৬ হাজার ৪৬০ জন আহত হয়েছে। এর আগে ইসরায়েলে গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং ২০০ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করে হামাস।

মন্তব্য করুন